কুষ্টিয়া মেহেরপুর মহাসড়ক মানেই যেন দুর্ঘটনার হাতছানি, প্রতিদিন প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে নানা রকম দুর্ঘটনা। প্রাণঘাতী এইসব দুর্ঘটনাকে অনেকাংশে বাড়িয়ে তুলেছে কুষ্টিয়া কুষ্টিয়া মেহেরপুর সড়কে গড়ে ওঠা গাছ কেটে প্রকৃতি ধ্বংসকারী কয়েকটি প্লাইউড ফ্যাক্টরী। প্রতিদিন সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় অসংখ্য খড়ি বোঝাই ট্রাক। টু ওয়ে সড়কের ওয়ান ওয়ে ব্লক করে আনলোডের অপেক্ষায় দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকা এইসব ট্রাক গুলোই হতে পারে বড় কোন দুর্ঘটনার কারণ। যাতায়াতকারী যেকোনো যানবাহনই পতিত হতে পারে বড় কোন দুর্ঘটনায়। বিষয়টি নিয়ে ভাবা এখন সময়ের দাবি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের টনক নড়বে কি? নাকি অপেক্ষা করতে হবে বড় কোন দুর্ঘটনা অবধি, যখন আর কিছুই করার থাকবে না। বিষয়টি নিয়ে ভাবার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।
কুষ্টিয়ার ছয়টি উপজেলার সড়কগুলোতে অবৈধভাবে বাস ও ট্রাক পার্কিং করায় ঘটছে প্রাণহানির মত দুর্ঘটনা। কেউ হচ্ছেন পঙ্গু আবার কেউ হারাচ্ছেন তাদের স্বজন। কুষ্টিয়ার শহরে বাসের ডিপো থাকা স্বত্বেও মজমপুর গেটের বাইপাস সড়কের পাশে জিলা স্কুল পর্যন্ত পদ্মা-গড়াই নামক কিছু বাসসহ ঢাকা কোচগুলো রাস্তার পাশে রেখে মেরামত, ধোয়া মুছার কাজ করে থাকেন প্রতিদিন। এতে করে যানজট লেগেই থাকে ব্যাস্ত এ সড়কগুলোতে শহরে। তবে এ বিষয়ে প্রশাসনের নজর একেবারেই নেই বলে জানান সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরা। সরেজমিনে দেখা যায় শুধু কুষ্টিয়া শহরই না দৌলতপুর, খোকসা, কুমারখালী, মিরপুরের সড়কগুলোতে এ ধরনের চিত্র দেখা যায় প্রতিদিন। অন্যদিকে সড়ক দখল করে গ্যারেজ ব্যবসা, কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের বটতৈল মোড় থেকে বিআরবি ফ্যাক্টরি পর্যন্ত দীর্ঘ সড়ক জুড়ে দুইপাশ দখল করে ছোট বড় গাড়ি পার্কিং করে মেরামতের কাজ করছে অন্তত ৩০টি মটর গ্যারেজ। ফলে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট ও বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি। ইতোমধ্যে এসব এলাকায় ইউপি সদস্য, পুলিশ সদস্য, বিএনপির নেতা, রিক্সা চালক, মোটর সাইকেল চালক এবং শিশুসহ বেশ কয়েকজন সড়ক দুর্ঘটনায় দিয়েছেন তরতাজা প্রাণ। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন হেলাল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়াকশপ, বাবু ইঞ্জিনিয়ারিং, পুষ্প ইঞ্জিনিয়ারিং, ফারুক ইঞ্জিনিয়ারিং, মানিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও মিলন ওয়ার্কশপসহ বহু গ্যারেজ মালিক সড়কের উপরেই গাড়ি মেরামতের কাজ করে আসছে। ফলে সড়কপথে চলাচলরত যানবাহন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। বিষয়টি প্রশাসনের চোখের সামনে ঘটলেও দীর্ঘদিন ধরে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তারা বলছেন, বারবার অভিযোগ করার পরও দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন নেই। সাধারণ মানুষের দাবি, এইসব গ্যারেজ অবিলম্বে সড়ক থেকে সরিয়ে নির্ধারিত স্থানে স্থানান্তর করতে হবে। অন্যথায় প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকা দুর্ঘটনা একসময় ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। নিরাপদ সড়কের স্বার্থে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি। বাস মালিক সমিতির সভাপতি আক্তার হোসেন বলেন- রাস্তার দুই পাশে গাড়ী রাখার কোন নিয়ম নেই। তাদের এখান বাস রাখা ও মেরামতের জন্য ডিপো আছে। বাস চালকদের সেখানে গাড়ি না পার্কিং করার নির্দেশ দেওয়া আছে। নিষেধ থাকা স্বত্বেও কিছু কিছু গাড়ী চালক সড়কের দুই পাশে গাড়ী রেখে মেরামত ও পরিস্কার করেন। বিষয়টি দুঃখজনক। এ বিষয়ে হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন জানান রাস্তার পাশে গাড়ী পার্কিং করে মেরামত করছে এ ধরনের গাড়ীগুলো প্রতিদিনই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে শহরের বিষয়গুলো একটু আলাদা। এগুলো দেখভালের দায়িত্বে জেলা পুলিশ ও পৌরসভা ।
